রবিবার, ১৫ এপ্রিল, ২০১৮

পহেলা বৈশাখ বাঙ্গালীর সার্বজনীন উতসব

রমনার বটমুলে ছায়ানট এর বর্ষবরন কিংবা চট্টগ্রামের ডিসি হিল পার্কে পহেলা বৈশাখ এর বর্ষবরন একটা ঐতিহ্যের মতো বাংগালী সংস্কৃতির ধারক বাহক হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে পালিত হয়ে আসছে।
উদিচীর অনুষ্ঠানে বোমা মামলার পর ও স্তিমিত হয়ে যায়নি, থেমে থাকেনি, বরং দিন দিন নতুন নতুন মাত্রা যোগ হয়ে নতুন বছরের এই দিন টাকে আনন্দ উতযাপনের একটা উপলক্ষ্য হিসেবে নিয়েছে বাংগালী।  বছরের শুরুর দিনটা মানুষ  দুঃখ কষ্ট গুলো ভুলে একটা প্রতীকি সম্ভবনার বিষয় মাথায় রেখে সনাতন কাল  থেকে বছরের প্রথম দিনটা ভালো কাটলে একটু ভালো কাটবে বছরটা,  মনে মনে এই স্বান্তনা লালন করে যে সারা বছরটা তার এমন ই। কাটে যেন।বেচে থাকার যুদ্ধে  কঠিন বাস্তবতার নানান জটিল সমস্যার আবর্তে আমারা সাধারন মানুষ গুলো একেকটা দিন যদি দুঃখ যন্তনা আর হতাশা ভুলে নতুন করে বাচার প্রেরনা হিসেবে দিনটা পালন করি তাতে সমস্যা যে কোথায় বুঝতে পারছিনা।

চারুকলার ছাত্ররা মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করে তাতে নানা রং বে রং এর মুখোশ আর ও  বর্নিল আয়োজন থাকে এটা তাদের পাঠ্য সুচীরই অংশ। তাদের পডাশোনা টাই এই কেন্দিক আর বাংগালী সংস্কৃতি যেহতু বিভিন্ন কৃষ্টি আর ঐতিহ্যের সমন্বিত রুপ তাতে পহেলা বৈশাখ এর দিন হালখাতা, কিংবা বাকীতে বিক্রয় না করা, ধার দেনা, বগড়া বিবাদ এডিয়ে চলা, ইলিশ আর,পান্তা আর ভর্তা ভাজা খাওয়ার যে রীতি রেওয়াজ বাংগালীর পহেলা বৈশাখ বাংগালীদের উতসব এ পরিনত করেছে।

বাংগালী কারা?
মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ, সব ধর্ম বর্নের এক মিলিত নৃতাত্বিক গোষ্ঠীর নাম  বাংগালী, মুসলমান দের আরো উতসব মুখর দিন যেমন ইদ তেমনি হিন্দুদের আছে পুজো পার্বন। কিনৃতু বাংগালীদের আর কোনো উপলক্ষ্য আছে কি যেখানে জাতি ধর্ম বর্ন নির্বিশেষে এক লাইনে দাড়ায়। নাহ নেই!!!

ছিল অংহকার করার, গর্ব করার মুক্তি যুদ্ধ ছিলো, বংগবন্ধু ছিলো বাংগালীদের স্বাধীনতার একক পেটন্ট হিসেবে, কিন্তু আমরা তা থাকতে দিই নি। বাংগালীর স্বাধীনতার আনন্দ টা কে টুকরো টুকরো করে  দিয়েছে রাজনীতি আর ধর্ম দুই মিলে, বংগবন্ধুকে বাংগালী জাতিস্বঃতার নেতা হিসেবে আওয়ামীলীগ ই নিজেদের সম্পত্তি বানিয়ে জয়বাংলা এখন কেবল তারাই বলে।
বাংগালীর একক পরিচয় বাংগালী হিসেবে মেনে নিতে ভয় কাদের, যারা নিজেদের আধিপত্য বাদী মনোভাব কায়েম করে বাংগালীকে কাচের মতো টুকরো টুকরো করে কোন ও টা  মুসলমান কোনটা হিন্দু কোনটা বাংলাদেশী হিসেবে  ভাগ করে একক যে  শক্তি তা বিনাশ করতেই সদা যুদ্ধং দেইী।
আ ভাই মংগল শোভা যাত্রা আমার ধর্ম সমর্থন করে না আমি যাবোনা ব্যাস, হিন্দু দেবতার নাম আছে এই রকম একরা গানের দুই লাইন গলায় তুললে আমি হিন্দু দেবতার পুজো করছি মনে করার কি কারন থাকতে পারে।

প্রচারনা প্রোপাগান্ডার এমন পর্যায়ে পৌছেছিলো যেন পান্তা ভাত দিয়ে এক টুকরো ইলিশ খাওয়া অমুসলিমদের কাজ।

আসলে বাংঙালীকে কেউ এক হতে দিতে  চায় না কারন কেউ মনে করে পুরো বাংগালী জাতি স্বত্বা এক হয়ে গেলে সর্বনাশ। সব ভেসে যাবে বানের জলের মতো।

ধর্ম নিরপেক্ষতাকে তখন ধর্মহীনতা বলা যাবেনা।

বাংঙালী আর বাংলাদেশী দু ধারার জাতীয়তাবাদী চেতনায় আর বিভক্ত করা যাবেনা।

একটা নতুন শাড়ী কি পানজাবী  পরে একটু সাজগোজ করে যদি একটা দিন বাংগালী পরিচয়ে আমরা একটু আনন্দ করতে চাই সেখানে  কেন এত ধর্ম, রাজনীতি আর রাষ্ট যন্তের চোখ রাংগানী কিংবা খবরদারী।

বেশতো অাছেন হাসিনা খালেদার আচলের তলায়, লজ্জা করেনা, নাকি ওটা তসলিমা নাসরিন যাবার সময় তার ভ্যানিটি ব্যাগে করে নিয়ে গেছেন।আমাকে যদি ইলিশ মাছটা হিন্দুদের একমাত্র খাবার হিসেবে নাস্তিক হয়ে যাবার ভয় দেখান বা  ভুলে যেতে হয় তো আপনি কেন ভাবী আর বুবুর আছলে লুকিয়ে মিও মিও,করবেন,আর আমার ছেড়ে দেওয়া ইলিশের টুকরো গ্রোগাসে আপনিই গিলবেন জনাব, চিনিতো আপনাদের স্বভাব জানিনা ভাবছেন কেন?

আসেন বাইরে মুসলমান হিসেবে গর্ব করতে পারি এমন একজন নেতা আমাদের দরকার যিনি মুসলমান এবং বাংগালী, কোন মুক্তিযোদ্ধার রক্ত রাংঙানো হাতের ইশারায় আমি একজন মুসলমান হিসাবে সমর্থন করবনা, আমি পেট্রোডলার কিংবা ইউ এস ডলার প্যাকেটের বিনিময়ে যারা ধর্মকে রাজনীতি নিয়ন্ত্রন এর হাতিয়ার হিসেবে ভাড়ায় দেন নিজের সম্পত্তি ভেবে,
সব শালাই  বাটপার, রাজনীতি আর ধর্ম এরা সব নিজেদের স্বার্থেই তুরুপের তাসের মতো পকেটে রাখে। 

ভারতের গর্দভদের গরুর রচনা লেখার হীন অপচেষ্ঠা কিন্তু  বাংগালীত্ব হজম করতে পরবেনা।সব  গরুর রক্তই লাল সেটার জবাই হোক ভারত সীমান্ত কি কাশ্মীরেই হোক এই  বাংলায়।

আর বাংঙাল আমি কাংগাল নই।
আমি বাংগালী তবে কাংঙালী নই

আমার নিজস্ব ঢংয়ের বাংঙালীয়ানা থাকবে এটা স্বাভাবিক,আর সেটা বছরের একটা দিন পালন করলে বাকী ৩৬৪ দিন তো রইল আপনাদের জন্য।

আমি বাংগালী এই পরিচয়ে গর্বিত।

আমি মুসলমান এই পরিচয় আমার রক্তের উত্তরাধিকার।

আমি নাস্তিক নই, আমি একজন  মুসলমান এবং আমি একজন  বাংগালী। আমার ধর্ম একান্ত আমার, আমার বাংগালীত্ব সবার, সকলের ধর্ম আর বর্নের সর্বজনের।

আমি আমার ধর্ম নিয়ে রাজনীত করতে যেমন অনিচ্ছুক তেমনি বাংগালীত্বকে মৌলবাদ কি  হিন্দুত্ববাদ তথা উগ্রবাদের  হাতে তুলে দিতে নিতান্ত  আপারগ!!!

মাফ করবেন আমি বাংলায় কথা বললবই আমার কন্ঠ  রোধ করার সুযোগ নাই।আমি সকালের ফজর নামাজ পড়ে বছরের ওই একটা দিন পান্তা দিয়ে ইলিশ খাবই।

আপনার পোষালে আপনি বাকী সব দিন যা ইচ্ছে করেন, আর তাতে না পোষালে যার যার মতো হিন্দুস্থান কি পাকিস্থান যেখানে ইচ্ছে !!!!!!!

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন